বৃহস্পতিবার, ০৮ Jun ২০২৩, ০৯:১৪ অপরাহ্ন

ব্রি-২৮ ও ৮১ ধান চাষ করে বিপাকে কৃষক

ব্রি-২৮ ও ৮১ ধান চাষ করে বিপাকে কৃষক

জাকির হোসেন রাজু :: বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার কিছু এলাকায় ব্রি-২৮ ও ৮১ ধান চাষ করে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। ধানের অধিকাংশই চিটা। ফলে তারা বছরের একমাত্র ফসল হারিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।
উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জমিতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে ব্রি-২৮ ও ৮১ জাতের ধানে এর প্রকোপ বেশি। এ রোগের প্রভাবে ধানে চিটা হওয়ায় আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। তবে উপজেলা কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, বিশ্বম্ভরপুরে ব্রি-২৮ জাতের ধান খুবই কম চাষ করা হয়েছে। আর ব্লাস্ট রোগটি ব্রি- ২৮ জাতের ধানেই ধরেছে। ঔষধের মাধ্যমে ব্লাস্টের নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছে কৃষি বিভাগ।
কৃষি অফিসের তথ্যমতে, উপজেলার ৫টি ইউনিয়নে চলতি বছর হাওরে ৭ হাজার ২৫ হেক্টর এবং হাওর বহির্ভূত এলাকার ৩ হাজার ৫৩৩ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ করা হয়েছে। শনিবার পর্যন্ত ১ হেক্টর জমির ধান কাটা হয়েছে।
ফতেপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য আব্দুল হেকিম বলেন, আমি এবছর প্রায় ১৪ বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করেছি। ফলনও ভালো হয়েছে। কিন্তু ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ফসলের অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। গড়ে আমার প্রায় ৩ বিঘা জমিতে ব্লাস্টের আক্রমণ হয়েছে বলা যায়। হাওরের ব্রি- ২৮, ২৯ ও ৮১ জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করেছে।
অনন্তপুর গ্রামের চাষি সামসুল আলম জানান, এবার ৮ একর জমিতে বোরো ধানের চাষ করেছি। গত বোরো মৌসুমে ৬ একর জমিতে ধান চাষ করেছিলাম। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানও খুব ভালো হয়েছে। শেষ সময়ে এসে ধানে ব্লাস্টের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। আমার প্রায় ৪ একর জমিতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ হয়েছে।
কৃষক রেজাউল করিম বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বৈশাখ মাসে হাওরের আবহাওয়ার পূর্বাভাসও ইতিবাচক মনে হচ্ছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টি বোরো চাষিদের জন্য ছিল আশীর্বাদস্বরূপ। যার ফলে ফলন ভালো হয়েছে। তবে কিছু জমিতে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণের জন্য কৃষককে লোকসানের মুখে পড়তে হবে।
ফতেপুর ইউনিয়নের শাহপুর গ্রামের কৃষক আবু লেইছ জানান, ৩ বিঘা জমিতে বোরোর আবাদ করেছেন তিনি। এবার বোরো ধানের ফলন খুব ভালো হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া, সার, বালাইনাশক ও সেচ সঠিকভাবে দেওয়ায় ধানের ছড়া লম্বা ও ফলন ভালো হয়েছে। বিঘা প্রতি ১৫-১৬ মণ থেকে ১৮-২০ মণ পর্যন্ত ধান কৃষকের ঘরে উঠবে বলে তিনি মনে করেন।
বিশ্বম্ভরপুরের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শামসুল আলম বিধু বলেন, এবছর নন হাওরের ধানের ফলন ভালো হয়েছে। অনুকূল আবহাওয়া হওয়ায় এবং সময়মত রোপণ, সার, বালাইনাশক ও সেচ দেওয়ার ফলে নন হাওরে বোরোর ফলন ভালো হয়েছে। ধানের দাম ভালো হলে কৃষকরা লাভবান হবেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নয়ন মিয়া জানান, চলতি মৌসুমে বিশ্বম্ভরপুরে রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ধানের ভালো ফলন হয়েছে। তবে ২৮ জাতের কিছু জমিতে ব্লাস্ট রোগ আক্রমণ করেছে। ইতিমধ্যে আমরা এগুলো ঔষধের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ করতে পেরেছি। উৎপাদিত ধানের সঠিক বাজার দর পেলে কৃষকদের বিগত দিনের ক্ষতি অনেকটাই পুষিয়ে যাবে এবং আগামীতে এই উপজেলায় বোরো ধানের চাষ আরো বৃদ্ধি পাবে।

শেয়ার করুন




 

 

 

 

© 2017-2022 All Rights Reserved Amadersunamganj.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!