মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৫:০৩ পূর্বাহ্ন

সফল নার্সারি ব্যবসায়ী বিশ্বম্ভরপুরের আব্দুল জলিল

সফল নার্সারি ব্যবসায়ী বিশ্বম্ভরপুরের আব্দুল জলিল

জাকির হোসেন রাজু:: নার্সারি ব্যবসা করে নিজের ও পরিবারের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটিয়েছেন জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার শীলডোয়ার গ্রামের মৃত ফেদু খানের ছেলে আব্দুল জলিল। এলাকায় একজন সফল উদ্যোক্তা হিসেবে সবার পরিচিত মুখ তিনি। একসময়ে অর্থকষ্টের মধ্য দিয়ে জীবনযাপন করলেও এখন স্ত্রী ও ১২ ছেলেমেয়ে নিয়ে সচ্ছলভাবে জীবন যাপন করছেন তিনি।

আব্দুল জলিল জানান, তিনি ১৯৭৫ সালের দিকে সুনামগঞ্জ শহরে কৃষি মেলাতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শেই নার্সারি ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেন। শুরুতে জায়গা সংকট থাকার কারণে নানান সমস্যায় পড়তে হয়েছে তাকে। বর্তমানে প্রায় ৬০শতক জায়গা নিয়ে তার নার্সারির বিস্তার।

শুরুতে বাড়ির পাশে অল্প জায়গাতে নার্সারি ব্যবসা শুরু করেন তিনি। এরপর আব্দুল জলিলকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। ৪৫ বছর ধরে নিজের হাতে চারা তৈরি করে সরবরাহ করছেন বিশ্বম্ভরপুর উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায়। অনেকেই মুগ্ধ হয়েছেন তার হাতে গড়া সবুজের সমারোহ দেখে। আবার কেউ কেউ আব্দুল জলিলের মতো নার্সারি করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্ট করছেন। অনেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি ব্যবসায়ী তার কাছ থেকে চারা সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন স্থানীয় হাটবাজারে।

আব্দুল জলিল জানান, প্রথম দিকে তার অনেক শ্রম দিতে হয়েছে নার্সারির পেছনে। অভিজ্ঞতার কারণে এখন আর খুব বেশি চিন্তা করতে হয় না। তার নার্সারিতে ৪জন শ্রমিক নিয়মিত কাজ করেন। তারাই নার্সারির পরিচর্যা করে থাকেন। চারা রোপন সম্পর্কে আব্দুল জলিল বলেন, বীজ থেকে চারা তৈরির ক্ষেত্রে প্রথমে পলিব্যাগে মাটি প্রস্তুত করে বীজ অথবা চারা রোপণ করতে হয়। এ জন্য মাটিতে পরিমিত টিএসপি, গোবর, পটাস, খৈল দিয়ে এক সপ্তাহ রাখতে হয়। সাধারণত ফুল, ফল ও পাতাবাহার গাছ ২০ থেকে ৩৫ দিনের মধ্যে বিক্রির উপযোগী হয়ে ওঠে। ছোট, মাঝারি ও বড় সব ধরনের গাছের চারাই এখানে পাওয়া যায়। তার নার্সারিতে বীজ ও কলম দুই মাধ্যমে চারা উৎপাদিত হয়ে থাকে।

আব্দুল জলিল জানান, প্রতি বছর প্রায় আড়াই লাখ চারা উৎপাদন করে বিক্রি করা হয় তার নার্সারি থেকে। আম, জাম, লিচু, জামরুল, আমড়া, পেয়ারা, জলপাই, কতবেল, আমলকী, লেবু, মাল্টা, বরই, কামরাঙ্গা, ডালিম ইত্যাদি ফলের চারা তার নার্সারি চারার মধ্যে রয়েছে। এ ছাড়া বনজ গাছের মধ্যে রয়েছে রেইনট্রি, মেহগনি, আকাশমণি, চাম্মুল, নারকেল, সুপারি, লাম্মু ইত্যাদি। ওষুধি গাছের মধ্যে রয়েছে নিম, হরীতকী, বয়রা, অর্জুন ও এলোভেরা ইত্যাদি।

চারা উৎপাদন আর বিক্রি করে বছরে বেশ ভালো আয় হয়ে থাকে বলেও জানান তিনি। আব্দুল জলিলের সংসারে এখন কোনো অভাব নেই। একসময়ের অভাব-অনটনের সংসারে ফিরে এসেছে আর্থিক সচ্ছতা। ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা করাতে আর কোন রকম কষ্ট করতে হচ্ছে না।

এ ব্যাপারে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারন কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, আব্দুল জলিলের নার্সারিতে উৎপাদিত চারার বেশ সুনাম রয়েছে। এ ধরনের উদ্যোক্তারা যাতে করে ব্যবসায়ী হিসেবে টিকে থাকতে পারে এবং দেশের বনায়নে ভূমিকা রাখতে পারেন সে জন্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা হবে।

শেয়ার করুন




 

 

 

 

© 2017-2022 All Rights Reserved Amadersunamganj.com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
error: Content is protected !!