মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৩:৩৭ পূর্বাহ্ন
জাকির হোসেন রাজু:: দেশের উত্তর-পূর্ব অংশের অন্যতম জেলা সুনামগঞ্জ। জেলাটি ধানের রাজধানী হিসেবে পরিচিতি থাকলেও প্রাকৃতি সৌন্দর্যের রূপ লোভনীয়। এ জেলার বিভিন্ন উপজেলায় রয়েছে ২৫ টির বেশি পর্যটন কেন্দ্র। যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার ভ্রমণ পিপাসুদের পদচারণা পড়ে। এবারের ঈদের ছুটিতে জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে বেড়াতে যাওয়া হতে পারে সেরা সিদ্ধান্ত।হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জে হাওর আর পাহাড়ের মিলনে সমৃদ্ধ তাহিরপুর, ছাতক, দোয়ারাবাজার উপজেলার ২৫টির বেশী বিভিন্ন পর্যটন স্পট নয়ানাবিরাম, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সমৃদ্ধ। সেই সৌন্দর্য উপভোগের জন্য ডেইলি বাংলাদেশের পাঠকদের সামনে পর্যটন কেন্দ্রগুলোর বর্ণনা তুলে ধরা হলো-
টাঙ্গুয়ার হাওর:
ছবি: সংগৃহিত
একটি প্রবাদ আছে-নয়কুড়ি বিল, ছয় কুড়ি কান্দার সমন্বয়ে গঠিত শত বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে এই হাওর। যেখানে নানা প্রজাতির বনজ ও জলজ প্রাণী, হিজল, করচের বাগ এ হাওরের সৌন্দর্যকে আরো দর্শনীয় করেছে। বর্ষায় টাংগুয়ার হাওর এক বিশাল সমুদ্রের রূপ ধারণ করে আর শীতের সময় অতিথি পাখির আগমনে টাংগুয়ার হাওরকে আরো আকর্ষণীয় করে তুলে। এছাড়াও রয়েছে হাওর সংলগ্ন ৬৮টি গ্রামের যুগ যুগ ধরে বসবাস করা মানুষের জীবন জীবিকার মুগ্ধকর চিত্র। এই হাওরে পানির রূপের বর্ণনা নাই দিলাম। নিচ চোখে দেখে জীবনের পরিপূর্ণতা অর্জন করতে পারেন।
কিভাবে যাবেন: বর্ষাকালে সুনামগঞ্জ শহরের সাহেব বাড়ি নৌকা ঘাট থেকে ইঞ্জিন বোট বা স্পীড বোট যোগে সরাসরি টাঙ্গুয়ার হাওর যাওয়া যায়। ইঞ্জিন বোটে ৫ ঘন্টায় এবং স্পীড বোটে ২ ঘন্টা সময় লাগে। সেক্ষেত্রে ইঞ্জিন বোটে খরচ হয় ২,০০০/- থেকে ২,৫০০/- টাকা পক্ষান্তরে স্পীড বোডে খরচ হয় ৭,৫০০/- থেকে ৮,০০০/- টাকা। বেসরকারী ব্যবস্থায়পনায় সেখানে রাত্রি যাপনের কোন ব্যবস্থা নেই তবে সরকারী ব্যবস্থাপনায় ৩ কিঃ মিঃ উত্তর-পূর্বে টেকেরঘাট চুনাপাথর খনি প্রকল্পের রেস্ট হাউজে অবস্থান করা যায়। গ্রীষ্মকালে শহরের সাহেব বাড়ি খেয়া ঘাট পার হয়ে অপর পার থেকে প্রথমে মোটর সাইকেল যোগে ২ ঘন্টায় শ্রীপুর বাজার/ডাম্পের বাজার যেতে হয়। ভাড়া ২০০ টাকা। সেখান থেকে ভাড়াটে নৌকায় টাঙ্গুয়া ঘরে আসা যায়। সেক্ষেত্রে ভাড়া বাবদ ব্যয় হতে পারে ৩০০-৪০০/- টাকা।
শিমুল বাগান:
ছবি: জাকির হোসেনর রাজু
‘নারী হয় লজ্জাতে লাল/ ফাল্গুণে লাল শিমুল বন/ এ কোন রঙে রঙিন হলো বাউল মন, মনরে’/ অথবা ‘ও পলাশ ও শিমুল কেন এমন তুমি রাঙালে’ বাংলা গীতি-কবিতায় চিত্তে দোলা দেওয়া এমন অনেক পঙ্কির দেখা মিলে। বহুবর্ষজীবী ন্যাড়ামাথা শিমুলবনের ডালে ঝুলে থাকা রক্তলাল আগুনফুল তাই তপ্ত মনের চিরন্তন এক বিরহকে কোথায় যেন উড়িয়ে নিয়ে যায়; এক নিঃশুন্য অঞ্চলে। সেই অঞ্চলে রঙিন মন ওড়ে বেড়ায়, ঘুরে বেড়ায়। এক অন্তহীন সুখ মনের সমূহ অসুখকে একপাশে ফেলে প্রেয়সীকে নিয়ে অনন্তের পথে হেঁটে যেতে ইচ্ছে করে। সুত্রে জানাযায়, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় আসার পর জলমহাল ব্যবসায়ী হাজী জয়নাল আবেদিনের নিয়ন্ত্রিত টাঙ্গুয়ার হাওরটি হাতছাড়া হয়ে যায়। তিনি এসময় অন্য কিছু ভাবেন। একদিন রুক্ষ বালুভূমি মানিগাও গ্রামের পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন। এর মধ্যে মাহরাম নদীর কিনারে দেখলেন তিনটি লম্বাটে শিমুল গাছ। ফুলগুলো খুব সুন্দর। তার বিষন্ন মন ভালো হয়ে যায়। উদ্যোগ নেন তিনি দেশের সর্ববৃহৎ শিমুল বাগান করবেন।
বারেকটিলা:
ছবি: সংগৃহিত
বারিক্কারটিলা এলাকায় আইফেল টাওয়ার নামে খ্যাত। ৩৬৫ একর জায়গা জুড়ে এ টিলায় রয়েছে বাহারি রং বেরংঙ্গের গাছ-পালা ও প্রাকৃতিক সৌর্ন্দয। বর্ষায় উত্তর দিকে মেঘালয় পাহাড়ে খেলারত মেঘগুলো মনে হয় হাত বাড়ালেই ধরা যাবে। পাহাড়ের গায়ে নানা রঙ্গের মেঘের খেলা। মেঘ কখনো সবুজ পাহাড়কে ডেকে দিচ্ছে আবার কখনো বৃষ্টি হয়ে ভিজিয়ে দিচ্ছে তার আপন ভালোবাসায়। পাহাড় আর মেঘের সঙ্গমের দৃশ্য, প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য। যে রূপ আর সৌন্দর্য সামান্য সময়ের জন্য হলেও অভিভূত হতে হয়। সব সময় মুগ্ধ করে প্রতিনিয়িত দেশ বিদেশের আগত পর্যটকের। নিজের ভিতরের সুপ্ত ভালোলাগাগুলো নিমিষেই বের হয়ে আসে। টিলায় ছোট ছোট আঁকাবাঁকা মেটো পথ নিয়ে যায় মনের সাজানো বাগানে। সমতল ভূমি থেকে এটি অনেক উচু এ টিলায় দাঁড়ালে পাশের গ্রাম গুলোকেও সমতল ভূমির মতো মনে হয়। টিলায় দাড়িঁয় সূর্যদ্বয় বা সূর্যাস্ত উপর থেকে দেখা যায়।
কিভাবে যাবেন: বর্ষায় সুনামগঞ্জ শহরের সাহেব বাড়ি নৌকা ঘাট হতে ইঞ্জিন নৌকা বা স্পিডবোট যোগে সরাসরি বারেকটিলা ও যাদুকাটায় যাওয়া যায়। সময় লাগবে ৪৫ মিনিট। খরচ হবে যাওয়া আসায় ৭-৮ হাজার টাকা। ইঞ্জিন নৌকায় খরচ হবে ২-৩ হাজার টাকা। সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা। বছরের যেকোন সময় সুনামগঞ্জ বৈঠাখালি খেয়া ঘাট হতে মোটরসাইকেল যোগে সরাসরি যাদুকাটা ও বারেক টিলা যেতে সময় লাগবে ৪৫ মিনিটি, টাকা খরচ হবে জনপ্রতি ২০০টাকা। সরকারি বা বেসরকারি কোন উন্নত মানের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় সারাদিন ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ শহরে ফিরে যেতে পারেন। সেখানে রয়েছে আধুনিক রেস্ট হাউজ, হোটেল রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য সুবিধা ।
যাদুকাটা নদী:
ছবি: সংগৃহিত
বিপুল সম্ভাবনা আর প্রাকৃদিক সৌন্দর্যের ডালা সাঁজিয়ে আছে বাংলাদেশের উত্তর পূর্ব দিগন্তে অবস্থিত ভাটির জনপদ সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা নদী রূপের নদী। সম্পদের নদী, শ্রম ও সমৃদ্ধির নদী। দেশের এ প্রান্তিক জনপদে প্রকৃতি যেন অকৃপণ হাতে বিলিয়ে দিয়েছে অফুরন্ত সম্পদ, সম্ভাবনা আর অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্য। নীল আকাশে সাদা মেঘের খেলা। কখনো জমাট আবার কখনো হালকা বাতাসে দলছুট হয়ে পাগলা ঘোড়ার মত উত্তরে দাঁড়ানো আকাশে ছোঁয়া বিশাল মেঘালয়ের খাসিয়া পাহাড়ে গিয়ে আছড়ে পড়ছে। তারই দৃশ্য সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত বারেক টিলা সংলগ্ন যাদুকাটা নদীর প্রান্তে ফুটে ওঠে। তখন যে কেউ অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। সীমান্তবর্তী নদী যাদুকাটার যেন রূপের শেষ নেই। এই রূপে মুগ্ধ হচ্ছেন হাজার হাজার দর্শনার্থী ও পর্যটক। প্রায় সারা বছরই পর্যটকদের মিলনমেলায় পরিণত হয় যাদুকাটা নদীর তীর। দিন যতই যাচ্ছে বাড়ছে যাদুকাটা নদীর প্রতি সৌন্দর্য পিপাসুর সংখ্যাও বাড়ছে। যাদুকাটা নদী থেকে বালু, পাথর উত্তোলন করে জীবিকা নির্বাহ করছেন হাজার হাজার শ্রমিক।ভারতের মেঘালয় পাহাড়ের বুক চিড়ে বয়ে আসা ১৮টি পাহাড়ি ছড়ার মাধ্যমে বর্ষায় দেখা যায় চোখ জুড়ানো পাহাড়ি ঝরনা।
কিভাবে যাবেন: বর্ষায় সুনামগঞ্জ শহরের সাহেব বাড়ি নৌকা ঘাট হতে ইঞ্জিন নৌকা বা স্পিডবোট যোগে সরাসরি বারেকটিলা ও যাদুকাটায় যাওয়া যায়। সময় লাগবে ৪৫ মিনিট। খরচ হবে যাওয়া আসায় ৭-৮ হাজার টাকা। ইঞ্জিন নৌকায় খরচ হবে ২-৩ হাজার টাকা। সময় লাগবে ৩ ঘণ্টা। বছরের যেকোন সময় সুনামগঞ্জ বৈঠাখালি খেয়া ঘাট হতে মোটরসাইকেল যোগে সরাসরি যাদুকাটা ও বারেক টিলা যেতে সময় লাগবে ৪৫ মিনিটি, টাকা খরচ হবে জনপ্রতি ২০০টাকা। সরকারি বা বেসরকারি কোন উন্নত মানের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা না থাকায় সারাদিন ঘুরে ফিরে সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ শহরে ফিরে যেতে পারেন। সেখানে রয়েছে আধুনিক রেস্ট হাউজ, হোটেল রেস্তোরাঁসহ অন্যান্য সুবিধা ।
বাঁশতলাঃ
ছবি: সংগৃহিত
দোয়ারাবাজার উপজেলার বাঁশতলা-হকনগর শহীদ স্মৃতিসৌধ এলাকাটি সর্বমহলে এখন পর্যটন এলাকা হিসেবে পরিচিত। সীমান্তের বাঁশতলা-হকনগর রুচিশীল প্রকৃতি প্রেমিদের মন কেড়েছে। এখানে ভারতীয় সীমানার কোল ঘেঁষে জুমগাঁও পাহাড়ের উপর গারো জাতির বসবাস। তাদের সাজানো-গোছানো ঘর-বাড়ির পরিবেশ অত্যন্ত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।
গারো পাহাড়ের পাদদেশে ভারতের সীমান্ত। এখানের চারদিকে সবুজের সমারোহ। বিকেল বেলা পাখিদের কলরব ও বাতাসের মনমাতানো শব্দে প্রাণ জুড়ায়। ছোট ছোট টিলা আর পাহাড়ে সাজানো বিস্তৃর্ণ এলাকা। দেখলে মনে হবে কেউ যেন চারদিকে সবুজ রঙ ছড়িয়ে দিয়েছে। ভারত সীমান্তে পাহাড়ী ঝরনা চোখে পড়ার মত। এখান থেকে ফিরে হকনগরস্থ মৌলা নদীর উপর সুইস গেট দর্শন না করে যাওয়া যায় না। সুত্রে জানাযায়, ১ কোটি ২৬ লাখ ১০ হাজার টাকা ব্যয়ে ২০০৫ সালে এটি নির্মিত হয়। যদিও নদী শাসন প্রকৃতি বিরোধী তবুও বয়ে চলা পাহাড়ি ঝর্ণার মাঝে এ সুইস গেট আলাদা সৌন্দর্য্যরে সৃষ্টি করেছে। এখানে ঠান্ডা ও শীতল স্বচ্ছ পানিতে সাঁতার কাটলে সহজেই শরীরের ক্লান্তি দূর করে। সুইস গেটে পানির মনোহারি শব্দে গোটা এলাকা যেন মুখরিত হয়ে আছে। সুইস গেট ছাড়িয়ে কিছুটা সামনে গেলই দেখা মিলবে তৎকালীন মুক্তিযুদ্ধের ৫ নং সদর দপ্তর। এখানে কিছুটা ত্রিভুজ আকৃতির শহীদ মিনারের বেদিতে বসলে প্রাকৃতিক ঠান্ডা বাতাস মন ছুঁয়ে যাওয়ার মত। এখনাকার আশপাশের পরিবেশ খুবই মনোরম। সবুজ পাহাড় আর নীল আকাশের মিতালি দেখে মনে হবে যেন ‘আকাশে হেলান দিয়ে পাহাড় ঘুমায়।
দোয়ারাবাজার উপজেলাটি মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত ও পর্যটকদের আকর্ষণ করার এক অতুলনীয় পরিবেশ এখানে। এখানে রয়েছে টেংরা টিলা গ্যাস ফিল্ড, খাসিয়া মারা নদীর উপর রাবার ড্যাম, মারপসি খালের উপর বক্স সুইস গেট, বাংলাবাজার উপ-প্রকল্পে হাইড্রোলিক ট্রাকচার ও এন্ড এম সেড, বাঁশতলা হক নগর শহীদ স্মৃতি সৌধ, আদিবাসী পাহাড়, মুক্তিযোদ্ধা বীর প্রতীক, বীরাঙ্গনাসহ আরো অনেক দর্শনীয় স্থান রয়েছে।
ডলুরা শহীদ মিনারঃ
ছবি: সংগৃহিত
বাংলাদেশ ভারত আমত্মঃ সীমানার সংলগ্ন, এই উপজেলার সীমান্তে ৪৮ জন মহান শহীদ মুক্তি যোদ্ধার স্মৃতি বিজড়িত স্থান। ১৯৭১ সনে স্বাধীনতা যুদ্ধে শহীদদের মাজার এখানে। এরপার্শ্বে এখানে নৈসর্গিক শোভা অতীব মনোরম চলতি নদীর তীর এবং উত্তর পশ্চিম এলাকার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্য সম্বলিত পাহাড় যুগযুগ ধরে মানুষকে ইতিহাসের দিকে টেনে নেয়।
কিভাবে যাবেন: শহরের নবীনগর নামক স্থান থেকে সুরমা নদী খেয়া যোগে পার হয়ে হালুয়াঘাট থেকে অথবা শহরের বালু মাঠ নৌকা ঘাট থেকে ইঞ্জিন নৌকা যোগে হালুয়াঘাট থেকে রিক্সা অথবা টেম্পু যোগে ৫/৬ কিঃ মিঃ পথ অতিক্রম করে ভারতীয় সীমান্তের কাছাকাছি ডলুরা নামক স্থানে পৌঁছতে হয়। রিক্সাভাড়া ৫০ টাকা, টেম্পু ভাড়া ২০ টাকা।
শহীদ সিরাজ লেকঃ
ছবি: সংগৃহিত
কেউ বলে বাংলার কাশ্মির, কেউ বলেন লাইমস্টোন, আবার কেউ বা বলেন নীলাদ্রি। স্বর্গীয় সৌন্দর্যে ভরা জায়গাটা কাশ্মীর নয় আমাদের দেশেই, বলছি সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার টেকেরঘাট মেঘালয় সীমান্তবর্তী শহীদ সিরাজী লেকের কথা।এখানে আসা পর্যটকরা এ লেকটিকে বিভিন্ন নাম উপস্থাপন করতে দেখে সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন মতামতের ভিত্তিত্বে এই লেকটির নাম করণ করেছেন শহীদ সিরাজী লেক। অসংখ্য ছোট, বড় টিলা নদী, পরিবেষ্টিত প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে ভরপুর এক আকর্ষনীয় স্থানের নাম শহীদ সিরাজী লেক। যান্ত্রিক কোলাহল থেকে মুক্ত নির্জন স্থান পেতে এই লেকের বিকল্প নেই। লেকের রুপ লাবণ্য পর্যটকরা যত দেখবেন ততই মন ও হৃদয়কে আকর্ষনীয় করে তুলতে পারবেন।
বাউল সম্রাট শাহ আব্দুল করিম এর বাড়ি:
ছবি: সংগৃহিত
‘বন্দে মায়া লাগাইছে’, ‘কেন পিরিতি বাড়াইলারে বন্ধু ছেড়ে যাইবা যদি’, ‘বসন্ত বাতাসে সই গো’, ‘তুমি মানুষ আমিও মানুষ’, ‘প্রাণে সহে না দুঃখ বলব কারে’, ‘কোন মেস্তরি নাও বানাইল’, ‘ওরে ভব সাগরের নাইয়া’ সহ অসংখ্য জনপ্রিয় গানের গীতিকার, সুরকার শাহ আবদুল করিম ১৯১৬ সালের ১৫ ফেব্রুযারি সুনামগঞ্জের দিরাই থানার ধলআশ্রম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ইব্রাহীম আলী ও মা নাইওরজান।
দারিদ্র ও জীবন সংগ্রামের মাঝে বড় হওয়া শাহ আবদুল করিমের সঙ্গীত সাধনার শুরু ছেলেবেলা থেকেই। বাউল সম্রাটের প্রেরণা তার স্ত্রী, যাকে তিনি আদর করে ‘সরলা’ নামে ডাকতেন। ১৯৫৭ সাল থেকে শাহ আবদুল করিম পাশের উজানধল গ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেন।
ভাটি অঞ্চলের মানুষের জীবনের সুখ, প্রেম-ভালোবাসার পাশাপাশি তার গান কথা বলে সব অন্যায়, অবিচার, কুসংস্কার আর সাম্প্রদায়িকতার বিরূদ্ধে। সুনামগঞ্জের কালনী নদীর তীরে বেড়ে উঠা শাহ আব্দুল করিমের গান শুরুতেই ভাটি অঞ্চলে জনপ্রিয় হলেও শহরের মানুষের কাছে জনপ্রিয়তা পায় তার মৃত্যুর কয়েক বছর আগে। আর্থিক অসচ্ছলাতার কারণে কৃষিকাজে বাধ্য হলেও কোনো কিছুই তাকে গান রচনা থেকে বিরত রাখতে পারেনি। গানের মধ্যে প্রাণের সন্ধান পাওয়া শাহ্ আবদুল করিম রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ সম্মাননা একুশে পদকসহ (২০০১) পেয়েছেন কথা সাহিত্যিক আবদুর রউফ চৌধুরী পদক (২০০০), রাগীব-রাবেযা সাহিত্য পুরস্কার (২০০০), লেবাক অ্যাওয়ার্ড, (২০০৩), মেরিল-প্রথম আলো আজীবন সম্মাননা পুরস্কার (২০০৪), সিটিসেল-চ্যানেল আই আজীবন সম্মাননা মিউজিক অ্যাওয়ার্ডস (২০০৫), বাংলাদেশ জাতিসংঘ সমিতি সম্মাননা (২০০৬), খান বাহাদুর এহিয়া পদক (২০০৮), বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী সম্মাননা (২০০৮), হাতিল অ্যাওয়াডর্স (২০০৯), এনসিসি ব্যাংক এনএ সম্মাননা ইত্যাদি।
তার প্রকাশিত গ্রন্থগুলোর মধ্যে আফতাব সঙ্গীত, গণ সঙ্গীত, কালনীর ঢেউ, ধলমেলা, ভাটির চিঠি, কালনীর কূলে, শাহ আব্দুল করিম রচনাসমগ্র উল্লেখযোগ্য।
কিভাবে যাবেন: দিরাই উপজেলা হইতে হেমন্তে রিস্কা ৫০/- সি এন জি ২০/- মটর বাইক ৫০/- , বর্ষায় নৌকা ২০/- ।
হাসন রাজা মিউজিয়াম:
ছবি: সংগৃহিত
সুনামগঞ্জ শহরের তেঘরিয়ার সাহেববাজার ঘাটের পার্শ্বে সুরমা নদীর কূল ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে হাসন রাজার স্মৃতি বিজড়িত ঐতিহ্যবাহী হাসন রাজার বাড়ি। ১৮৫৪ সালে এখানেই তিনি জন্মান এবং ১৯২১ সালে মৃত্যুবরণ করেন। এটি সুনামগঞ্জ পৌরসভার অন্তর্ভূক্ত। হাসন রাজারা ছিলেন সম্ভ্রান্ত জমিদার। মরমী সাধক হাসন রাজা তার জীবনের অধিকাংশ সময়ই এখানে কাটিয়েছেন। এটি বর্তমানে “হাসন রাজা মিউজিয়াম” হিসাবে পরিবর্তিত হয়েছে।
কিভাবে যাবেন: সড়ক পথে ঢাকা হতে প্রথমে সুনামগঞ্জ যেতে হবে; অতঃপর সেখান থেকে বাড়িটিতে যেতে হবে। সড়ক পথে ঢাকা হতে সুনামগঞ্জের দূরত্ব ২৯৬ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে সিলেট রেল স্টেশনের দূরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার; এখানে রেল যোগাযোগ নেই বিধায়, প্রথমে সিলেট এসে তারপর সুনামগঞ্জ আসতে হয়। সুনামগঞ্জ এসে সেখান থেকে রিক্সা বা সিএনজি অটো রিক্সায় অতি সহজেই সাহেববাজার ঘাটের সন্নিকটস্থ হাসন রাজার বাড়িতে আসা যায়। সুনামগঞ্জের মূল বাস স্ট্যান্ড থেকে সাহেববাজার ঘাটের নিকটস্থ বাড়িটিতে আসার জন্য ভাড়া হবেঃ রিক্সায় – ১০/- – ২০/-, সিএনজিতে – ৫০/- – ৮০ টাকা।
গৌরারং জমিদার বাড়ি:
ছবি: সংগৃহিত
২০০ বছরের পুরনো গৌরারং জমিদার বাড়ি ৩০ ত্রকর জমির উপর দাঁড়িয়ে আছে। সুনামগঞ্জ, তথা গৌরারং রাজ্যের প্রতাপশালী জমিদার রাম গোবিন্দ চৌধুরী , ১৮০০ সালের শুরুর দিকে এই জমিদারির প্রতিষ্ঠা করেন। এখানে রয়েছে ৬ টি আলাদা ভবন।
রঙমহল ভবনের সম্মুখভাগে রয়েছে বিশাল আকৃতির একটি পুকুর যা প্রাসাদ এর সৌন্দর্যকে আরও একধাপ বারিয়ে দিয়েছে । মূলভবনের ডান পাশে রয়েছে আরও একটি দীঘি যেখানে জমিদার বাড়ির নারীরা গোসল করতেন; যাতায়াতের জন্য রয়েছে জল বারান্দা। দেয়াল বেষ্টিত দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা দেখা যায় এখানে। রঙমহলের দেয়ালে নর-নারী, লতাপাতার বিভিন্ন চিত্রের দেখা মেলে।
কিভাবে যাবেন: শহর থেকে মাত্র ৩ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত এখানে যেতে হলে যেকোনো মাধ্যমে সুনামগঞ্জ সদরে আসতে হবে; তারপর সেখান হতে ওয়েজখালী হয়ে নৌকাযোগে টুকের বাজার এসে রিক্সা, মোটরসাইকেল, সিএনজি, ইজিবাইক ইত্যাদি যোগে আসতে হবে। সড়ক পথে ঢাকা হতে সুনামগঞ্জের দূরত্ব ২৯৬ কিলোমিটার এবং রেলপথে ঢাকা হতে সিলেট রেল স্টেশনের দূরত্ব ৩১৯ কিলোমিটার; এখানে রেল যোগাযোগ নেই বিধায়, প্রথমে সিলেট এসে তারপর সুনামগঞ্জ আসতে হয়।
সুখাইড় জমিদার বাড়ি:
ছবি: সংগৃহিত
আনুমানিক ১৬৯১ সালে মোঘল শাসনামলে মহামানিক্য দত্ত রায় চৌধুরী হুগলী থেকে আসাম যাওয়ার পথে কালিদহ সাগরের স্থলভূমি ভাটির প্রকৃতির রূপে মুগ্ধ হয়ে সুখাইড়ে জায়গির কেনেন। ঐ সময় থেকেই সুখাইড়ে বাড়ি নির্মাণ পরিকল্পনা শুরু করেনমহামাণিক্য। পাশে পাহাড়ী নদী বৌলাই, হাওরের থৈ থৈ ঢেউ, বন ঝোপ আর সবুজ প্রাকৃতিক পরিবেশে সমৃদ্ধ থাকায় ১৬৯৫ সালে সুখাইড়ে ২৫ একর জমির ওপর বাড়ি নির্মাণ শুরু করেন জমিদার মোহনলাল। কয়েক পুরুষের চেষ্টায় শেষ হয়েছিল বাড়ির নির্মাণকাজ।জমিদারি যুগে সুনামগঞ্জ ছিল ৩২ টি পরগনায় বিভক্ত। দৃষ্টিনন্দন নির্মাণশৈলীর কারণে সুখাইড় জমিদার বাড়ি হাওর রাজ্যের রাজমহল হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিল। এ জমিদারির বিস্তৃতি ছিল দক্ষিণে ঘাগলাজুর নদীর উত্তরপাড়, উত্তরে বংশীকুন্ডা, পশ্চিমে ধররমপাশা এবং পূর্বে জামালগঞ্জ। এক সময় এ বাড়ির মালিকানায় ছিল ধানকুনিয়া বিল, চারদা বিল, কাইমের দাইড়, সোনামোড়ল, পাশোয়া, ছাতিধরা, রাকলা, বৌলাই, নোয়ানদী, চেপ্টা এক্স হেলইন্নাসহ ২০ টি জলমহল। কতিথ আছে জমিদারা বাড়ি দেখতে আসেছিলেন ইংরেজ প্রশাসক বেলেন্টিয়ার। বাঘ শিকারের জন্য তিনি গিয়েছিলেন টাঙ্গুয়ার হাওরে। খবর এসেছে তিনটি বাঘ জিম্মি করে রেখেছে বেলেন্টিয়ারকে। পরে ঐ সময়ের জমিদার মইয়ুক চৌধুরী আইন লঙ্ঘন করে বাঘ তিনটিকে গুলি করে মেরে বেলেন্টিয়ারকে উদ্ধার করেন। এ জন্য মইয়ুক চৌধুরীকে একটি বন্দুক উপহার দেন ইংরেজ সাহেব। মহামানিক্য দত্তের উত্তরাধিকারীরা “রায় চৌধুরী” উপাধিতে ভূষিত হওয়ার ইতিহাস জানাতে গিয়ে সুখাইড়ের জমিদারদের উত্তরাধিকারী মলয় রায় চৌধুরী জানান, তাদের পূর্বপুরুষের একজন সুখাইড়ে এসে সুন্দরী ও ধনাঢ্য এক দাস সম্প্রদায়ের মেয়েকে বিয়ে করে নিজের উপাধী পরিবর্তন করেন। এ ছাড়া মহামাণিক্যের চতুর্থ পুরুষ প্রতাপ রায় চৌধুরী সুখাইড় পার্শ্ববর্তী রাজাপুরের এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে বিয়ে করে ধর্মান্তরিত হয়ে রাজাসুরে চলে যান। তিনি ধর্মান্তরিত হলেও জমিদারির অর্ধেক পান তিনি। পরে রাজাসুরের জমিদার হন তিনি। জমিদারি প্রথা বিলোপের পর জমিদারের উত্তরাধিকাররা অর্থ সংকটে পড়ে যান এবং অন্য পেশায় কোন রকমে চলছে তাদের জীবন। জমিদারি প্রথা বিলোপের সঙ্গে সঙ্গে সামান্য কিছু ধানের জমি এবং বাড়ির ২৫ একর জায়গা ব্যাতীত বাকী জায়গা-জমি চলে যায় সরকারের হাতে।
কিভাবে যাবেন: সুনামগঞ্জ থেকে লোকাল বাহন যোগে ৩৫ কিঃমিঃ দূরে সুনামগঞ্জ এর জামালগঞ্জ উপজেলায় গমন সেখান থেকে নৌ পথে সুখাইড় জমিদার বাড়ি।
পাইলগাঁও জমিদারবাড়ি:
ছবি: সংগৃহিত
প্রাচীন পুরাকীর্তির অন্যতম নিদর্শন সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার পাইলগাঁও জমিদারবাড়ী। প্রায় সাড়ে ৫ একর ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত তিন শত বছরেরও বেশী পুরানো এ জমিদার বাড়ীটি এ অঞ্চলের ইতিহাস-ঐতিহ্যের নিদর্শন ।এ জমিদার পরিবারের শেষ জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধু রী ছিলেন প্র খ্যাত শিক্ষাবিদ ও রাজনীতিবিদ। তিনি ছিলেন সিলেট বিভাগের কংগ্রেস সভাপতি এবং আসাম আইন পরিষদের সদস্য। সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলায় জগন্নাথপুর উপজেলার অধীন ৯ নম্বার পাইলগাও ইউনিয়নের পাইলগাও গ্রামে ঐতিহ্যবাহি এ জমিদারীর অবস্থান। জমিদার বাড়ী দক্ষিণ দিকে সিলেটের কুশিয়ারা নদী বহমান। প্রখ্যাত ঐতিহাসিক অচ্যূতচরণ চৌধুরী পাইলগাও জমিদার বংশের রসময় বা রাসমোহন চৌধুরী হতে প্রাপ্ত সূত্রেলিখেছেন যে; পাইলগাওয়ে বহুপূর্বকালে পাল বংশীয় লোক বসবাস করত। এ গোষ্টিয় পদ্মলোচন নামক ব্যক্তির এক কন্যার নাম ছিল রোহিণী। কোন এক কারণে রাঢ দেশের মঙ্গলকোট হতে আগত গৌতম গোত্রীয় কানাইলাল ধর রোহিণীকে বিবাহ করত গৃহ-জামাতা হয়ে এখানেই বসবাস শুরুকরেন। কানাইলাল ধরের আট পুরুষ পরে বালক দাস নামের এক ব্যক্তির উদ্ভব হয়। এ বালক দাস থেকে এ বংশ বিস্তৃত হয়। বালক দাসের কয়েক পুরুষ পর উমানন্দ ধর ওরফে বিনোদ রায় দিল-ীর মোহাম্মদ শাহ বাদশা কর্তৃ ক চৌধুরী সনদ প্রাপ্তহন। বিনোদ রায়ের মাধব রাম ও শ্রীরাম নামে দুই পুত্রের জন্মহয়। তার মধ্যেমাধব রামজনহিতকর কর্মপালনে নিজ গ্রাম পাইলগাঁও এ এক বিরাট দীঘি খনন করে সুনাম অর্জন করেন। তার দেয়া উক্তদীঘি আজও ঐ অঞ্চলে মাধব রামের তালাব হিসেবে পরিচিতহচ্ছে। মাধব রামের দুই পুত্র মদনরাম ও মোহনরাম । উক্ত মোহনরামের ঘরে দুর্লভরাম, রামজীবন, হুলাসরাম ও যোগজীবন নামে চার পুত্রের জন্ম হয়। এই চার ভাই দশসনা বন্দোবস্তের সময় কিসমত আতুয়াজানের ১থেকে ৪ নং তালুকের যতাক্রমে বন্দোবস্তগ্রহন করে তালুকদার নাম ধারণ করে। এদের মধ্যে হুলাসরাম বানিয়াচং রাজ্যের দেওয়ানি কার্যালয়ে উচ্চ পদের কর্মচারীনিযুক্ত হন। হুলাসরাম চৌধুরী বানিয়াচং রাজ্যের রাজা দেওযান উমেদ রাজারঅনুগ্রহে আতুয়াজান পরগণায় কিছু ভূমি দান প্রাপ্তহন। হুলাসরামের প্রাপ্তভূমির কিছু কিছু চাষযোগ্যও কিছু ভূমি চাষ অযোগ্যছিল। পরবর্তিতে হুলাসরাম চাষ অযোগ্য ভূমিগুলোকে চাষযোগ্যকরে তুললে এগুলোই এক বিরাট জমিদারীতে পরিণত হয়ে উঠে। হুলাস রামের ভাতুষ্পুত্রবিজয়নারায়ণের একমাত্রপুত্রব্র জনাথ চৌধুরীজমিদারি বর্ধিত করে এক প্রভাবশালী জমিদারে পরিণত হন। ব্রজনাথ চৌধুরীর দুইপুত্ররসময় ও সুখময় চৌধুরী। রসময় চৌধুরীর পুত্র ব্রজেন্দ্রনারায়নই ছিলেন এবংশের শেষ জমিদার।
কিভাবে যাবেন: উপজেলা সদর হতে সড়ক পথে (জীপ/কার/সিএনজি/বাইক করে যাওয়া যায়।
হাওলি জমিদার বাড়ি:
ছবি: সংগৃহিত
জেলার তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের হলহলিয়া গ্রামটি এক কালে প্রাচীন লাইড় রাজ্যের রাজধানী ছিল লাউড় রাজ্যের চতুসীমা ছিল পশ্চিমে ব্রহ্মপুত্র নদী, পূর্বে জৈন্তায়া, উত্তরে কামরুপ সীমান্ত ও দক্ষিণে বর্তমানে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পর্যন্ত বিস্তৃতি ছিলো । এ রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কেশব মিত্র নামে এক ব্রাহ্মণ। সম্রাট আকবরের শাসনামলে লাউড় রাজ্য খাসিয়াদের আক্রমণের শিকার হলে কিছু দিনের জন্য এর রাজধানী বর্তমান হবিগঞ্জ জেলার বানিয়াচংয়ে স্থানান্তারিত হয়েছিল। পরে লাউড় রাজ্যের গোবিন্দ সিংহ তা পুনরুদ্ধার করে আবার রাজধানী স্ব-স্থানে পুনঃস্থাপন করেন। প্রায় ১২’শ বছর আগে রাজা বিজয় সিংহ রাজ বাড়িটি তৈরী করেন। যা আজোও হাওলি জমিদার বাড়ি নামে এলাকায় সমাদৃত। ৩০ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত রাজ বাড়িটিতে ছিল বন্ধীশালা, সিংহদ্ধার, নাচঘর, দরবার হল, পুকুর ও সীমানা প্রাচীর। ১২’শ বছর পরেও এর কিছু স্থাপনা এখনও দৃশ্যমান রয়েছে।
কিভাবে যাবেন: সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে নৌকা করে অথবা মোটর সাইকেল করে যেতে পারবেন।