বৃহস্পতিবার, ০৮ Jun ২০২৩, ০৯:৪৩ অপরাহ্ন
কুলেন্দু শেখর দাস:
‘আমি ভিক্ষা চাই তোমার দরবারে, বাবা মৌলারে, ভিক্ষা চাই তোমার দরবারে’, ‘বড়ই গাছের তলে, দেখো মিলিয়া সকলে, কি সুন্দর আনন্দ মেলা ভোর সকালে’, ‘যৌবন কালে প্রথম দেখা রে বন্ধু, কাম নদীর ওই ধারে, প্রেম সাগরে সাঁতার দিলাম হাতে হাত ধরে’ এমন আধ্যাতিক হাজারো গানের রচয়িতা এমরুল কয়েছ লোক উসৎসব সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জের অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই অনুষ্ঠান কে ঘিরে প্রতিবছর উপজেলার ভীমখালী ইউনিয়নের বিছনা গ্রামে আরম্ভর পূর্ন লোক উৎসবে কবি, সাহিত্যিক, গীতিকার, কন্ঠশিল্পী ও হাজার-হাজার ভক্তবৃন্দের মিলন মেলায় পরিণত হয়।
বুধবার দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত লোকউসৎসবে সভাপতিত্ব করেন অনুষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা গীতিকার ডা: এমরুল কয়েছ। কবি শহীদ মিয়া ও সমাজকর্মী উজ্জ্বল টিটুর যৌথ সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে অনুষ্ঠান উদ্ভোধন করবেন বাংলাদেশ বেতারের গীতিকার অন্তরা মরমী গোষ্ঠির সভাপতি যুক্তরাজ্য প্রবাসী মরমী কবি শাহ্ আব্দুল ওয়াদুদ। প্রধান আলোচক ছিলেন বাংলাদেশ বেতার ও টেলিভিশনের গীতিকার মাসিক বাসিয়া পত্রিকার সম্পাদক মো: নওয়াব আলী। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, জামালগঞ্জ সরকারী কলেজ অধ্যক্ষ (অব:) হাবিবুর রহমান চৌধুরী, বীরমুক্তিযোদ্ধা সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ইউসুফ আল-আজাদ, মানবাধিকার কর্মী সাঈদুর রহমান সাঈদ, জেলা গীতিকার ফোরামের সম্পাদক অরুন তালুকদার, জামালগঞ্জ প্রেসক্লাব সভাপতি অঞ্জন পুরকায়স্থ, দৈনিক নয়া দিগন্ত’র জেলা সংবাদদাতা তৌহিদ চৌধুরী প্রদীপ, গীতিকার কামরুন নাহার চৌধুরী শেফালী, সাবেক ভাই চেয়ারম্যান মিছবাহ্ উদ্দিন প্রমুখ।
লোক উৎসবে নিজ উপজেলা ছাড়াও দুর-দুরান্ত থেকে হাজারো ভক্তবৃন্দের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে জামালগঞ্জের বিছনা গ্রাম। এমরুল কয়েছ লোক উৎসবের আয়োজনে জামালগঞ্জের ভীমখালীর বিছনা গ্রামে প্রতিবছর চৈত্র মাসের পহেলা বুধবারে শুরু হয় বাউলদের মিলন মেলা। শুধু বাউলই নয়, এ যেন সকল শ্রেণীর পেশার মানুষের মিলন মেলায় পরিণত হয়। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নানা পেশার মানুষ এসে আনন্দ উৎসব অনুভব করে এই লোক উৎসবে।
আলোচনাসভা শেষে জমকালো আয়োজনের মধ্যদিয়ে শুরু হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এসময় সঙ্গীত পরিবেশন করেন বিভিন্ন শিল্পীবৃন্দ। লোক উৎসবকে কেন্দ্র করে ভাটির জনপদ জামালগঞ্জ উপজেলায় খ্যাতিমান বাউল গানের বাউল শিল্পীসহ বিভিন্ন গুনীজনের আগমন ঘটে এমরুল কয়েছের নিজ গ্রাম ‘বিছনা গ্রামে’। বাউল স¤্রাট শাহ্ আব্দুল করিম, রাধা রমন দত্ত, হাসন রাজা ও এমরুল কয়েছ এর গানে গানে মাতোয়ারা হয়ে উঠে এই উৎসবে।
লোক উৎসবে প্রতিষ্ঠাতা আয়োজক এমরুল কয়েছ বলেন, সত্য সাহিত্য কে আধ্যাতিক চেতনার মাধ্যমে, মানুষের বিবেক কে জাগ্রত করতে ও সকল প্রকার পাপ কাজ হিংসা বিদ্বেষ দূর করে সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা করাই আমার লোক উৎসবের মূল লক্ষ। ১৮ বছর পূর্ব থেকেই বিছনা গ্রামে লোক উৎসব শুরু হয়েছিল, আজ পর্যন্ত এ উৎসব চলে আসছে। এ উৎসবের দিনটি মানুষের মিল লনমেলায় পরিণত হয়। বক্তারা বলেন, সঙ্গীত মানুষের হৃদয়ের খোরাক। লোক উসসবের মাধ্যমে এমরুল কয়েছ বেঁচে থাকবেন চিরকাল। তিনি তার লেখনির মাধ্যমে, আধ্যাতিক, হাওরের, দেশের বিভিন্ন গানের মাধ্যমে সারা বিশ্বে একদিন স্থান করে নেবেন। যারা সঙগিতকে ভালোবাসেনা তারা মানুসকেউ ভালোবাসেনা। জামারগঞ্জের লোক উসৎবটি সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় প্রতিবছর চৈত্র মাসের পহেলা বুধবারে আয়োজন করার জন্য সরকারের উর্দ্বতন কতৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন।